কেন পঙ্গু বিষণ্নতা একটি মেজাজ ব্যাধি আপনি আজ নির্ণয় করা উচিত

”

যদিও বিষণ্ণতা একজন ব্যক্তির জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে, তবুও কেউ তার দৈনন্দিন রুটিন চালিয়ে যেতে পারে। যাইহোক, কখনও কখনও এটি একজন ব্যক্তির মৌলিক কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে।

পঙ্গু বিষণ্নতা অতিক্রম

মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধিগুলি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয় কারণ ভুক্তভোগী তার মধ্য দিয়ে যা চলছে তা যোগাযোগ করতে পারে না। বিষণ্নতা হল সবচেয়ে সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধিগুলির মধ্যে একটি, এবং যদি প্রাথমিকভাবে নির্ণয় করা না হয়, তবে এটি ব্যক্তির জীবন এবং স্বাস্থ্যের উপর দুর্বল প্রভাব ফেলতে পারে। বিভিন্ন ধরণের বিষণ্নতাজনিত ব্যাধি রয়েছে এবং এই অসুস্থতার সবচেয়ে গুরুতর রূপ হল ক্লিনিকাল বিষণ্নতা ।

আপনি কি জানেন যে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন বিষণ্নতায় ভোগেন? আপনি যদি ভাবছেন, “কেন আমার বিষণ্নতা বিষণ্ণতা আছে?” , আপনি একা নন! এবং, প্রকৃতপক্ষে, বিষণ্নতায় ভুগছেন এমন বেশিরভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না যে তাদের বিষণ্নতার একটি রূপ রয়েছে যা পঙ্গু বিষণ্নতা নামে পরিচিত। আসুন এই অবস্থা সম্পর্কে আরও বুঝতে পারি এবং কীভাবে আপনি সফলভাবে এটি অতিক্রম করতে পারেন!

পঙ্গু বিষণ্নতা সংজ্ঞা: পঙ্গু বিষণ্নতা কি ?

পঙ্গু বিষণ্নতা হতাশার একটি গুরুতর রূপ, যাকে কখনও কখনও মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার (MDD)ও বলা হয়। এই ধরনের গুরুতর বিষণ্নতাকে বলা হয় ‘পঙ্গু’ বিষণ্নতা কারণ এটি একজন ব্যক্তির মৌলিক কার্যকারিতাকে সীমিত করে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবন ও রুটিনকে প্রভাবিত করে। এই ধরনের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহ এবং মাস, কখনও কখনও এমনকি কয়েক বছর ধরে এর লক্ষণগুলি ভোগ করে! অনেকগুলি কারণ ব্যক্তিদের মধ্যে পঙ্গু বিষণ্নতার কারণ হতে পারে – প্রিয়জনের ক্ষতি বা মৃত্যু, আর্থিক ক্ষতি ইত্যাদি।

পঙ্গু বিষণ্নতায় কী ঘটে?

সঙ্গে প্রতিটি ব্যক্তির অভিজ্ঞতা পঙ্গু বিষণ্নতা একটি অনন্য, তবে কয়েকটি লক্ষণ এবং তাদের মধ্যে একটি সাধারণ থ্রেড তৈরি করে। এই ডিগ্রী ডিপ্রেশনে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই অলস বোধ করে এবং সারাদিন বিছানায় পড়ে থাকে। পঙ্গু বিষণ্ণতা বিষণ্নতার অন্যান্য রূপের সাথে বিভ্রান্ত হতে পারে, তবে এটি ভিন্ন যেভাবে এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কোনভাবেই কাজ বা কাজ করার মত অনুভব করেন না।

মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি যা পঙ্গু বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে

বিভিন্ন ধরনের বিষণ্নতাজনিত ব্যাধি পঙ্গু বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যেমন:

• ডিসথেমিয়া বা ক্রমাগত ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার
• প্রসবের বিষণ্নতা
• সাইকোটিক ডিসঅর্ডার
• সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার
• বাইপোলার ডিসঅর্ডার
• ডিসরাপ্টিভ মুড ডিসরেগুলেশন ডিসঅর্ডার (ডিএমডিডি)
• মাসিকের আগে ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার (PMDD)

পঙ্গু বিষণ্নতা উপসর্গ

যদিও অনেক লোক “পঙ্গু” শব্দটিকে মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার আক্রমণাত্মক বলে মনে করে, এই অবস্থাটি দুর্বল করে দেয় এবং একজন ব্যক্তিকে অনেক বেশি পঙ্গু করে দিতে পারে। পঙ্গু বিষণ্নতার লক্ষণগুলি সাধারণত আপনি মৃদু এবং মাঝারি বিষণ্নতার ক্ষেত্রে যা লক্ষ্য করবেন তার চেয়ে বেশি গুরুতর। এই লক্ষণগুলির মধ্যে অনেকগুলি পেশাদার চিকিত্সার পরেও থাকতে পারে, যদিও সামান্য মাত্রায়। পঙ্গু বিষণ্নতার কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

• দুঃখ, হতাশা, উদ্বেগ এবং রাগের তীব্র অনুভূতিগুলি দীর্ঘস্থায়ী এবং অবিরাম।
• ঘন ঘন আত্মহত্যার চিন্তা
• ঘুমের ব্যাঘাত- হয় খুব কম ঘুমানো বা খুব বেশি।
• দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং মানুষের সাথে মেলামেশায় আগ্রহের অভাব।
• কাজ করতে অক্ষমতা বা অসুবিধা।
• অপরিচ্ছন্ন এবং দুর্বল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি
• ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তনের সাথে মেজাজ পরিবর্তন হয়
• ওজনে আকস্মিক পরিবর্তন
• হাতের একটি কাজে মনোনিবেশ করতে অসুবিধা, সহজেই বিভ্রান্ত
• বারবার এবং ঘন ঘন মাথাব্যথা এবং পিঠে ব্যথা
• শখের প্রতি আগ্রহের অভাব
• ক্ষুদ্রতম কাজ করতে অলসতা এবং শক্তির অভাব
• জীবনের ব্যর্থতা এবং নেতিবাচক দিকে মনোযোগ বৃদ্ধি
• অলস কর্ম, চিন্তাভাবনা এবং মোটর ফাংশন
• অতিরিক্ত খাওয়া বা ক্ষুধা হ্রাস
• বিরক্তি এবং সহজেই বিরক্ত

আপনি যদি এই লক্ষণগুলি অনুভব করেন তবে এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি এই লড়াইয়ে একা নন। যদিও আপনি অনুভব করতে পারেন যে সবকিছু হারিয়ে গেছে, আপনার জন্য প্রচুর সমর্থন, ভালবাসা এবং আশা রয়েছে। আপনাকে যা করতে হবে তা হল- পৌঁছানো!

“”আমার পঙ্গু বিষণ্নতা আছে। কেন আমার এই মুড ডিসঅর্ডার আছে?””

মেজাজের ব্যাধিগুলি হল মানসিক স্বাস্থ্যের অসুস্থতা, যেমন বিভিন্ন ধরণের বিষণ্নতা ব্যাধি যা আপনার মেজাজকে বিরক্ত করে। সবচেয়ে সাধারণ ধরনের মুড ডিসঅর্ডার হল বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং ডিপ7্যুরেশন। এই উভয় অবস্থাই গুরুতর উপসর্গের দিকে নিয়ে যেতে পারে, স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে এবং তাদের মানসিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে। এই কারণে, পঙ্গু বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই প্রতিবন্ধী বলে মনে হয়।

আরেক ধরনের বিষণ্ণ অবস্থা যা মুড ডিসঅর্ডার সৃষ্টি করে তা হল পারসিস্টেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার যা কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ একসাথে মেজাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কারণ এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী, এটি মারাত্মকভাবে পঙ্গু বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং, আপনি যদি পঙ্গু বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে মেজাজের ব্যাধি থাকাও স্বাভাবিক। একজন ব্যক্তি যদি দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিষণ্ণতায় ভোগেন তবে তার স্থায়ী ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার ধরা পড়ে।

সিডির সাথে মোকাবিলা করা: পঙ্গু হতাশার সাথে কীভাবে মোকাবিলা করবেন

আপনি যদি পঙ্গু বিষণ্ণতায় ভুগছেন এবং পঙ্গু হতাশার সাথে কীভাবে মোকাবিলা করবেন তা জানতে চান, আপনি একা নন! আমরাও বুঝি এটা কতটা কঠিন। যেকোনো ধরনের বিষণ্নতার সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ নয়। আপনার যখন একটি কাজ আছে, রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য একটি বাড়ি এবং বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার জন্য, তখন আপনার অনুভূতি এবং আবেগগুলি আপনাকে শেষ পর্যন্ত দুর্বল করে দেয়। যদিও বিষণ্নতা নিজেই মোকাবেলা করা কঠিন, অতিরিক্ত দায়িত্বগুলি এটিকে আরও কঠিন করে তোলে।

যদিও পঙ্গু বিষণ্নতার সাথে মোকাবিলা করা অসম্ভব বলে মনে হতে পারে, তবে শর্তটি গ্রহণ করা এবং আপনার স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার দ্বারা নির্ধারিত চিকিত্সার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু কার্যকর উপায় যা আপনাকে পঙ্গু হতাশা মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে:

• ব্যক্তিগত লক্ষ্য নির্ধারণ
• আপনি উপভোগ করেন এমন একটি শখ বা আবেগ বাছাই করা
• স্বাস্থ্যকর খাবার খান
• সক্রিয় থাকুন এবং প্রতিদিন অন্তত 30 মিনিটের জন্য ব্যায়াম করুন
• আপনার প্রিয়জনের মধ্যে মানসিক শক্তি এবং সমর্থন খুঁজুন
• আপনি যেমন সামাজিকীকরণ করছেন তেমনি একই অবস্থার লোকেদের সাথে সামাজিক গোষ্ঠীতে পৌঁছান

চিকিত্সা: পঙ্গু বিষণ্নতা নিরাময় কিভাবে

পঙ্গু বিষণ্নতার চিকিত্সা মূলত নির্ভর করে আপনি যে বিষণ্নতায় ভুগছেন তার উপর। পঙ্গু হতাশার জন্য কিছু চিকিত্সা বিকল্প হল:

ওষুধ

পঙ্গু হতাশার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওষুধ হল অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট। এই ওষুধগুলি নিয়মিতভাবে মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার এবং অন্যান্য ধরনের বিষণ্নতার জন্য ব্যবহার করা হয়।

সাইকোথেরাপি

ওষুধ ছাড়াও, পঙ্গু বিষণ্নতায় ভুগছেন এমন বেশিরভাগ রোগীকে সাইকোথেরাপির পরামর্শ দেওয়া হয়, যার মধ্যে একজন সাইকিয়াট্রিস্টের মতো লাইসেন্সপ্রাপ্ত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারদের সাথে কাজ করা জড়িত। এই পেশাদাররা আপনাকে আপনি যা অনুভব করছেন সে সম্পর্কে কথা বলার অনুমতি দেয় এবং সমাধান প্রদানে সহায়তা করে।

সাইকোথেরাপি কৌশল কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি (সিবিটি), আন্তঃব্যক্তিক থেরাপি এবং সমস্যা সমাধানের থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে।

ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপি (ইসিটি)

বিষণ্নতার গুরুতর ক্ষেত্রে, যেমন পঙ্গু বিষণ্নতার ক্ষেত্রে, ওষুধ এবং সাইকোথেরাপি রোগীকে উপশম করতে যথেষ্ট নাও হতে পারে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপি দেওয়া হয়। এই থেরাপিতে, ডাক্তার আপনার মস্তিষ্কের কিছু অংশকে উদ্দীপিত করেন যখন আপনি অ্যানেস্থেশিয়ার অধীনে থাকেন। উদ্দেশ্য হ’ল হতাশা-সম্পর্কিত লক্ষণ এবং আবেগ তৈরি করা থেকে মস্তিষ্ককে প্রতিরোধ করা।

হাসপাতালে ভর্তি

যদিও উপরে উল্লিখিত বেশিরভাগ চিকিত্সা বাড়িতে দেওয়া যেতে পারে, পঙ্গু বিষণ্নতার অত্যন্ত গুরুতর ক্ষেত্রে, রোগীকে ইন-পেশেন্ট চিকিত্সা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে। এটি তাদের আত্মহত্যার চেষ্টা থেকেও বাধা দেয়, যা এই রোগীদের মধ্যে খুব সাধারণ।

পঙ্গু বিষণ্নতার জন্য অনলাইন স্ক্রীনিং পরীক্ষা

বিষণ্নতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি নিবন্ধিত এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত পেশাদার দ্বারা চিকিত্সাগতভাবে নির্ণয় করা হয়। যাইহোক, আপনি যদি পঙ্গু বিষণ্নতার এক বা একাধিক উপসর্গ অনুভব করেন বা সন্দেহ করেন যে আপনার এই অবস্থা আছে, আপনি পঙ্গু বিষণ্নতার জন্য অনেকগুলি অনলাইন স্ক্রীনিং পরীক্ষার একটি নিতে পারেন। যদিও এই পরীক্ষাগুলি চূড়ান্তভাবে নির্ণয় করে না যে আপনার পঙ্গু বিষণ্নতা রয়েছে, তবে তারা অবশ্যই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে যে আপনাকে আরও মূল্যায়নের জন্য আপনার ডাক্তার বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে পরামর্শ করতে হবে কিনা। ইউনাইটেড উই কেয়ারে, আমাদের বিষণ্নতা মূল্যায়ন পরীক্ষা রয়েছে যা আপনাকে প্রত্যয়িত পেশাদাররা তৈরি করা প্রশ্নগুলির একটি সিরিজের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায় এবং আপনাকে আপনার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি, এবং আবেগ এবং সেগুলি বিষণ্নতামূলক বিষণ্নতা কিনা সে সম্পর্কে একটি অস্থায়ী সিদ্ধান্তে আসতে সাহায্য করে। আপনার পঙ্গু বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের কারণ যাই হোক না কেন, ইউনাইটেড উই কেয়ারে আপনার জীবনের এই পর্বটি কাটিয়ে উঠতে এবং আপনাকে সাহায্য করার জন্য কেউ আছে!

“